Skip to main content

১৬৫ কোটি টাকা পাচার: তথ্য চেয়ে বিএফআইইউতে চিঠি

এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে আবারও চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বিআইএফইউর মহাব্যবস্থাপক বরাবর চিঠিটি পাঠিয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধান স্বাক্ষরিত আরেকটি চিঠি ওই চিঠির সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ওই চিঠিতে প্রয়োজনীয় তথ্যের বিস্তারিত তালিকা দেওয়া হয়।

দুদকের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, তদন্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্তের প্রয়োজনে দুবাই, সিঙ্গাপুর ও কানাডার এফআইইউর মাধ্যমে মামলাসংশ্লিষ্ট তথ্য জরুরি ভিত্তিতে সংগ্রহ করে দুদকে সরবরাহ করার অনুরোধ জানিয়েছে।

চিঠিতে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরের পিনাক্যাল গ্লোবাল ফান্ডের সঙ্গে এবি ব্যাংকের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষরকারী দুই ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য, পিনাক্যাল গ্লোবাল ফান্ড সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য, দুবাইয়ের এডিসিবি ব্যাংকের বিস্তারিত তথ্য, এবি ব্যাংক থেকে দুবাইয়ের ব্যাংক হিসাবে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠানোর পর যে বা যাদের অনুকূলে/মাধ্যমে ওই অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, তাদের বিস্তারিত তথ্য, কোন ব্যাংকের কোন অ্যাকাউন্টে ওই ডলার পাঠানো হয়েছে, তার স্টেটমেন্ট, চেক বা পে-অর্ডার নম্বর বা এ–সংক্রান্ত তথ্যাদি।

দুদক সূত্র জানায়, ভুয়া অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি আটজনকে আসামি করে মামলা করে দুদক। মামলায় আটজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা, দুর্নীতিসহ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়।

এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শামীম আহমেদ চৌধুরী ও মো. ফজলুর রহমান, কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল, এবি ব্যাংকের হেড অব অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের (ওবিইউ) মোহাম্মদ লোকমান, হেড অব করপোরেট ব্যাংকিং মোহাম্মদ মাহফুজ উল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নুরুল আজিম ও এবি ব্যাংকের গ্রাহক আটলান্টিক এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল হক।

মামলা করার পরপরই ওয়াহিদুল হক, আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও সাইফুল হককে গ্রেপ্তার করে দুদক। পরে জামিন পান ওয়াহিদুল হক ও আবু হেনা মোস্তফা কামাল।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, দুবাইয়ে অবস্থানরত আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের সদস্য খুররম আবদুল্লাহ ও আবদুস সামাদ খান ব্যবসায়ী সাইফুল হকের বন্ধু। এবি ব্যাংক থেকে আত্মসাৎ করা টাকা পাচারের উদ্দেশ্যে এই দুজনের সঙ্গে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াহিদুল হকের পরিচয় করিয়ে দেন সাইফুল হক। ওয়াহিদুল ও সাইফুল একাধিকবার দুবাইয়ে এই প্রতারকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পরে ব্যাংকের হেড অব ট্রেজারি আবু হেনা মোস্তফা কামালকে নিয়ে দুবাইয়ে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেন ওয়াহিদুল হক। এ জন্য তাঁরা কোনো দাপ্তরিক অনুমোদন নেননি। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে কিছু না জানিয়ে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুবাইয়ে এসব সভা করেন তাঁরা।

এজাহারে বলা হয়, প্রতারক চক্রটি আগে থেকেই সিঙ্গাপুরভিত্তিক কোম্পানি পিনাক্যাল গ্লোবাল ফান্ড (পিজিএফ) তৈরি করে রেখেছিল। পরে দুবাইয়ে চেং বাও জেনারেল ট্রেডিং নামের আরেকটি কোম্পানি খোলে। সেই কোম্পানির নামে আবুধাবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে হিসাব খোলা হয়। পরে ওয়াহিদুল হক ও আবু হেনা ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে এড়িয়ে আবুধাবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ওই হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করেন।

সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই মামলায় সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন কিছু নথি পেলে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব হবে। এর আগে তথ্য সংগ্রহ করে দিতে দুবার বিএফআইউতে চিঠি পাঠানো হয়।

Comments

Popular posts from this blog

''খতিয়ান'' কি?

খতিয়ানঃ মৌজা ভিত্তিক এক বা একাধিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরণ সহ যে ভূমি রেকর্ড জরিপকালে প্রস্ত্তত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। এতে ভূমধ্যাধিকারীর নাম ও প্রজার নাম, জমির দাগ নং, পরিমাণ, প্রকৃতি, খাজনার হার ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের খতিয়ানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তন্মধ্যে সিএস, এসএ এবং আরএস উল্লেখযোগ্য। ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “থতিয়ান” বলে। খতিয়ান প্রস্তত করা হয় মৌজা ভিত্তিক।  = সি এস খতিয়ানঃ ১৯১০-২০ সনের মধ্যে সরকারি আমিনগণ প্রতিটি ভূমিখণ্ড পরিমাপ করে উহার আয়তন, অবস্থান ও ব্যবহারের প্রকৃতি নির্দেশক মৌজা নকশা এবং প্রতিটি ভূমিখন্ডের মালিক দখলকারের বিররণ সংবলিত যে খতিয়ান তৈরি করেন সিএস খতিয়ান নামে পরিচিত। . =এস এ খতিয়ানঃ ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাসের পর সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ করেন। তৎপর সরকারি জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে মাঠে না গিয়ে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে যে খতিয়ান প্রস্তুত করেন তা এসএ খতিয়ান নামে পরিচিত। কোনো অঞ্চলে এ খতিয়ান আর এস খতিয়ান নামেও পরিচিত। বাংলা ১৩৬২ সালে এই খতিয়ান প্রস্তুত হয় ব...

পুলিশ পেট্রোল বা পুলিশ টহল কত প্রকার ও কি কি?

পেট্রোল ডিউটি পুলিশ অফিসারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডিউটি। পুলিশ পেট্রোল ডিউটিকে সাধারণ ৮ ভাগে ভাগ করা যায়। নিম্নে এ গুলোর বর্ণনা করা হলোঃ ১। ফুট পেট্রোলঃ পায়ে হেঁটে নির্ধারিত স্থানে পাহারা দেয়াকে ফুট পেট্রোল বলে। ২। মোবাইল পেট্রোলঃ গাড়ীতে চড়ে নির্দিষ্ট এলাকা পাহারা দেয়াকে মোবাইল পেট্রোল বলে। ৩। বোট পেট্রোলঃ নৌকা, লঞ্চ বা স্পীড বোটে চড়ে নদী বা হাওরে পাহারা দেয়াকে বোট পেট্রোল বলে। ৪। ফিক্সড পেট্রোলঃ রাস্তার সংযোগস্থলে, হাটে, বাজারে, রেলস্টেশন ইত্যাদি স্থানে দাঁড়িয়ে পাহারা দেয়াকে ফিক্সড পেট্রোল বলে। ৫। ব্লক পেট্রোলঃ কোন নির্দিষ্ট স্থান ঘেরাও করে ঐ স্থানের জনগণের গতিবিধি লক্ষ্য করাকে ব্লক পেট্রোল বলে। ৬। এ্যাম্বুস পেট্রোলঃ কোন নির্দিষ্ট এলাকায় গোপনভাবে চুপচাপ বসে থেকে পথিকের গতিবিধি লক্ষ্য করাকে এ্যাম্বুস পেট্রোল বলে। ৭। ক্লক ওয়াইজ ও এন্টি ক্লক ওয়াইজ পেট্রোলঃ ঘড়ির কাটা যেভাবে ঘোরে ঐভাবে যথা “ক” সেন্টার হতে এক পার্টি পেট্রোল করতে করতে কোন নির্দিষ্ট স্থানে পৌছবে এবং ঐ পার্টি পথিমধ্যে সন্দেহজনক ব্যক্তি পেলে চ্যালেঞ্জ করবে ও প্রয়োজনে গ্রেফতার করবে। অন্য কোন পার্টি ঐ “ক” স...

বিষয়সমূহ- #ধর্ষণ কাকে বলে? #ধর্ষণের শাস্তি #নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ( ২০০০ সনের ৮ নং আইন ) ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু, ইত্যাদির শাস্তি #পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ধর্ষনের সাজা #ধর্ষিত হলে প্রাথমিকভাবে কি করণীয়? #ধর্ষণের মূহুর্তে নিজেকে রক্ষা করার উপায় সমূহ #ধর্ষণকারীকে রাসায়নিক প্রয়োগে যৌন সক্ষমতা নষ্টের আইন পাস! #সবশেষে কিছু কথা-

#ধর্ষণ কাকে বলে? উত্তরঃ- দন্ডবিধি আইনের ৩৭৫ ধারা মোতাবেক নিম্নলিখিত পাঁচটির যে কোন অবস্থায় পুরুষ লোক কোন নারী বা স্ত্রী লোকের সহিত যৌন সহবাস করলে সে ধর্ষণ করেছে বলে গণ্য হবে- ১।স্ত্রী লোকটির ইচ্ছার বিরোদ্ধে। ২। স্ত্রী লোকটির সম্মতি ব্যতীত। ৩।স্ত্রী লোকটির সম্মতি ক্রমেই, কিন্তু মৃত্যুর বা জখমের ভয় ভীতি দেখিয়ে সম্মতি আদায় করা হলে। ৪।স্ত্রী লোকটির সম্মতি ক্রমেই,কিন্তু পুরুষ টি জানে যে সে স্ত্রী লোকটির স্বামী নয়। স্ত্রী লোকটি জানে পুরুষ টি তার স্বামী, এ ভেবে স্ত্রী লোকটি ভূল করলে। ৫।স্ত্রী লোকটির সম্মতি ক্রমেই কিংবা সম্মতি ব্যতীত যদি স্ত্রী লোকটির বয়স ১৪ বছরের কম হয়। #ধর্ষণের শাস্তি: বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৮৬০ আইনের ৩৭৬ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ধর্ষণের অপরাধ করে তবে সে ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা দশ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদে সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং জরিমানা দণ্ডেও দণ্ডিত হবে।’ দণ্ডবিধি অনুসারে ধর্ষণ এমন একটি অপরাধ যা আমলযোগ্য কিন্তু জামিনযোগ্য নয়। এমনকি এটি মীমাংসারযোগ্যও নয়। নারী ধর্ষণ দন্ডবিধি আইনের ৩৭৫ ধারা। ধর্ষণের শাস্তি দন্ডব...