মাত্র ২০ বছর বয়সে হংকংয়ের আইন পরিষদে সহযোগী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়ে নজর কেড়েছেন বাংলাদেশী তরুণী বকর ফারিহা সালমা দিয়া বাকের; যিনি একদিন সেখানকার আইনপ্রণেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে দেয়া সাক্ষাতকারে ফারিহা বলেন, আমি সংখ্যালঘুদের মধ্য থেকে এসেছি এবং আমার বয়স মাত্র ২০, এটা দেখে আমার সহকর্মীরা হতবাক হয়ে গিয়েছিল।
ভিনদেশের মানুষদের হংকংয়ের মূলস্রোতের অংশ হতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। বাণিজ্য নগরীটিতে যারা সংখ্যালঘু হিসেবে বিবেচিত হন, স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে বাসাভাড়া, চাকরি সব ক্ষেত্রেই তাদের নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
এই বাধা টপকাতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ফারিহা হংকংয়ের প্রধান ভাষা ক্যান্টোনিস শেখাকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেন। ক্যান্টোনিস ছাড়াও তিনি একাধারে মান্দারিন, বাংলা, হিন্দী, ইংরেজী ও ফিলিপিনো (তাগালগ) ভাষায় পারদর্শী। ফারিহার জন্ম হংকংয়ে। ২৫ বছর আগে তার বাবা চাকরিসূত্রে পরিবার নিয়ে হংকংয়ে পাড়ি জমান এবং সন্তানদের উন্নত জীবন দিতে সেখানেই বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেন। বাবা-মার সঙ্গে ফারিহা কাউলুনের ইয়উ মা তেইয়ের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। তার ১৫ বছরের একটি ভাই আছে।
ফারিহা স্বপ্ন দেখেন, একদিন তিনি হংকংয়ের আইনপ্রণেতা হবেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে তিনি বলেন, আমি সরকার ব্যবস্থায় আরও বেশি সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ দেখতে চাই। আমি চাই হংকংয়ে সংখ্যালঘুরা আরও উন্নত জীবন পাক।
সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ফারিহা এরই মধ্যে নিজের স্বপ্ন পূরণের প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি আইন পরিষদের একজন সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। হংকংয়ের আইন পরিষদে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসা মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। দুই বছর বয়স থেকে ফারিহা হংকংয়ের প্রধান ভাষা ক্যান্টোনিস শেখা শুরু করেন এবং স্থানীয়দের মতো ক্যান্টোনিস ভাষায় পারদর্শী। ক্যান্টোনিস ভাষার ওপর দক্ষতাই হংকংয়ে তার জীবন এবং ক্যারিয়ার গঠন সহজ করে দিয়েছে বলে মনে করেন ফারিহা। বলেন, ক্যান্টোনিস খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমি এই ভাষায় দক্ষ না হতাম তবে ডিগ্রী থাকার পরও চাকরি পেতে আমাকে অনেক বাধার মুখে পড়তে হতো। ক্যান্টোনিস ভাষা হংকংয়ের সংস্কৃতির অংশ। এখানে বসবাস করতে এর গুরুত্ব অপরিসীম। স্কুলে অন্যান্য ভাষাভাষীর শিক্ষার্থীরা যখন ক্যান্টোনিস ভাষা শিক্ষাকে সহপাঠ হিসেবে নিয়েছে তখন ফারিহা সেটিকে প্রধান বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ক্যান্টোনিসে দক্ষতা বাড়াতে পড়াশোনার বাইরে তিনি নিয়মিত খবরের কাগজ পড়তেন এবং ক্যান্টোনিস ভাষার নাটক দেখতেন। তার এই প্রচেষ্টা এক সময় ফল দিতে শুরু করে। সূত্র : জনকণ্ঠ
Comments
Post a Comment